শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ অপরাহ্ন

কয়েক শ মানুষের সামনে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা

কয়েক শ মানুষের সামনে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা

স্বদেশ ডেস্ক:

কুমিল্লা নগরের চাঙ্গিনী এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে কয়েক শ মানুষের সামনে আক্তার হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আক্তারকে বাঁচাতে গিয়ে আরও অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন, তার ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যরা আক্তার হোসেনকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থল থেকে কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের তিন ভাইকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে চাঙ্গিনী মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আক্তার হোসেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার প্রয়াত আলী হোসেনের ছেলে। আক্তার হোসেন হোটেল ও মাটির ব্যবসা করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আক্তার হোসেন ও কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। আক্তারদের ঘরের পাশের একটি জায়গা নিয়ে কাউন্সিলরের সঙ্গে আক্তারের দ্বন্দ্ব রয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ নিয়ে আক্তার ও কাউন্সিলরের এক ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর কাউন্সিলর আলমগীর, তার পাঁচ ভাই, ভাতিজা ও পরিবারের সদস্যরা মসজিদের কাছে নামাজের আগে লোহার রড, পাইপ ও চাপাতি মজুত করেন।

দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে চাঙ্গিনী মসজিদে জুমার নামাজ পড়া শেষ হলে মুসল্লিরা একে একে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে তার ভাই ও ভাতিজারা মসজিদ থেকে আক্তারকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনেন। এরপর তারা কয়েক শ মানুষের সামনে আক্তারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। আক্তারকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে কাউন্সিলর আলমগীর গংয়ের হামলায় আরও ছয়জন আহত হন।

আহতরা হলেন- শাহজালাল আলাল, মো. হোসাইন, রেজাউল করিম, মো. সোহাগ, মনির হোসেন ও মো. শাকিল। পরে দ্রুত আক্তারসহ আহতদের নগরের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। কুমিল্লা নগরের মুন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আক্তার হোসেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের তিন ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন, তফাজ্জল হোসেন ও আমির হোসেনকে আটক করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে লোহার পাইপ জব্দ করা হয়। তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেছেন।

নিহত আক্তার হোসেনরে ছেলে মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘কাউন্সিলর, তার ভাই, ভাতিজা ও পরিবারের সদস্যরা আমার বাবাকে মসজিদ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে সবার সামনে হামলা করেন। এরপর তিনি মারা যান। সবার সামনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আমি এর বিচার চাই। আমিও বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হই।’

কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আক্তারের সঙ্গে জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে। এ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে নানা ধরনের অপপ্রচার চালায় আক্তারের লোকজন। এই কারণে নামাজের পর ঝামেলা হয়। আমি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম।’

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কাউন্সিলর আলমগীর ও তার ভাইয়েরা প্রকাশ্যে আক্তারের ওপর হামলা চালায়। মসজিদের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান কাউন্সিলরের পরিবার। এ ঘটনায় তার তিন ভাইকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে দুই পক্ষের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধ ছিল। আমি তখন মিটমাট করে দিই। এরপর আবার তারা মামলায় জড়ায়। লাশ দাফনের পর মামলা হবে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877